না খেয়ে থেকে ওজন কমানোর পরিণতি জানেন কি?
অতিরিক্ত ওজনের ফলে যে কোনো রোগ সহজে শরীরে বাসা বাঁধে। সুস্থ থাকতে হলে অতিরিক্ত ওজন অবশ্যই কমাতে হবে।
ঝরঝরে, ফিট শরীর পাওয়ার স্বপ্ন অনেকেই দেখেন। বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফেলতে তাই চেষ্টার অন্ত নেই। তবে অতিরিক্ত ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই খিদে থাকা সত্ত্বেও না খেয়ে থাকেন। বিপত্তিটা সেখানেই বাধে।
মনে রাখতে হবে ওজন কমানো মানেই না খেয়ে থাকা নয়। আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে শরীরকে না খেয়ে থেকে শরীর ফিট রাখা সম্ভব নয়। না খেয়ে থাকার মাধ্যমে মূলত শরীরের প্রতি অত্যাচার করা হয়। শরীরকে সচল রাখার জন্য আমাদের অবশ্যই প্রয়োজনীয় ক্যালরি ও শক্তি থাকা চাই।
চলুন, জেনে নেই, না খেয়ে ওজন কমাতে চাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো—
পুষ্টিহীনতা
যখন আমরা না খেয়ে থাকি, সেটি আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এতে শরীরে অনেক রকম অসুখ এসে দানা বাধে।
স্মৃতিশক্তি হারানো
খাদ্যসূচি ঠিকঠাক অনুসরণ না করলে তা স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিতে পারে। এটি আমাদের স্মৃতিশক্তিকে দুর্বল করে দেয়। মস্তিষ্ক ঠিক রাখতে প্রতিদিন আমাদের প্রয়োজনীয় ফ্যাট ও ক্যালরির প্রয়োজন।
চুল পড়া
না খেয়ে থাকলে বা সময়মতো খাদ্য গ্রহণ না করলে আমাদের শরীর পুষ্টিহীনতার স্বীকার হয়। আর এই পুষ্টিহীনতার কারণে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে চুল পড়ে যায়। এতে চুল আরো পাতলা হয়ে যায় ও বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে ফেলে।
শক্তির অভাব
সময়মতো সঠিক খাবার না খেলে একসময় আমরা দুর্বলতা অনুভব করি। তাই আমাদের উচিত স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করা।
ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে আপনার ক্ষুধা বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে যখন আপনি খাওয়া শুরু করবেন, আপনার শরীর অধিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করতে চাইবে। আর এভাবে চলতে থাকলে ওজন কমার বদলে আপনার ওজন বেড়ে যাবে।
সুস্থভাবে বাঁচতে আমাদের কাজ করতে হবে এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় হতে হবে। তাই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ ডায়েট আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাহলে করণীয় কী?
আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে পারেন-
- সকালে হালকা গরম পানিতে এক টুকরো লেবু মিশিয়ে পান করুন। পাবেন অব্যর্থ ও অশেষ উপকার।
- প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটুন।
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পানি পানের কারণে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের হয়ে যাবে।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
- সকালের খাবারের মেন্যুতে পুষ্টি সম্পন্ন খাবার ডিম, ওটস, সবজি, ফল, বাদাম রাখতে পারেন।
- ভাজাপোড়া তৈলাক্ত খাবার পরিহার করুন।
- রাত ৮ থেকে ৮.৩০ মিনিটের ভিতর রাতের খাবার শেষ করুন।
- কোনোভাবেই সকালের নাশতা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
- ভাত কম, শাক বেশি খান। প্রতি বেলার খাবারে ৫০ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর সবজি রাখুন।
- পেট পূর্ণ করে খাবেন না। পেটের তিন ভাগের এক ভাগ খাবার, এক ভাগ পানি আর এক ভাগ খালি রাখুন।
- প্রতিবার খাবারের পূর্বে এক গ্লাস পানি পান করুন। এতে বেশি খাবার খাওয়া থেকে বেচে থাকা যায়। পাশাপাশি পেটের অনেক অসুখ থেকে নিস্তার পাওয়া যায়।
- যখন খাবার খাবেন, তখন দ্রুত না খেয়ে আস্তে আস্তে খান। এতে অল্প খাবারেই আপনার পেট ঠিকঠাকভাবে ভরবে। যদি খুব বেশি তাড়াহুড়ো করে খান, তাহলে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন।
- চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
- ভিটিমন সি সমৃদ্ধ টকজাতীয় ফল খেতে হবে। টক ফল ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক।
- ওজন কমাতে চাইলে দিনেরবেলায় ঘুমাবেন না।
উপরের নির্দেশনাগুলো মেনে চললে আপনার অতিরিক্ত চর্বি ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেইসঙ্গে নিয়মিত ধর্মীয় প্রার্থনায় মনোযোগ দিন। এতে আপনি আরো সতেজ ও সজীব থাকবেন।
Leave a Comment